About Smart Tourism



‘স্মার্ট ট্যুরিজম’ শ্রীমঙ্গল তথা সিলেট বিভাগের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় আর্ন্তজাতিক মানের একটি দেশিয় ট্যুরিজম কোম্পানী। এই কোম্পানিটি প্রতিনিয়ত ভ্রমন পিয়াসু বা প্রকৃতি প্রেমিদের নিরাপদ ভ্রমনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করতে বদ্ধপরিকর। ‘স্মার্ট ট্যুরিজম’ সম্মানিত পর্যটকদের মূল্যবান সময়ের কথা বিবেচনা করে ডে ট্যুরের মাধ্যমে ‘চায়ের রাজধানী’ ও পর্যটক নগরী শ্রীমঙ্গলের দর্শনীয় স্থান পরিদর্শনের প্যাকেজ ট্যুর এর ব্যবস্থা করে থাকে। এছাড়া ২দিন/১রাত, ৩দিন/২রাত, ৪দিন/৩রাত এর প্যাকেজ ট্যুরের মাধ্যমে পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমনের ব্যবস্থা করাই ‘স্মার্ট ট্যুরিজম’ এর মূল লক্ষ্য।
‘স্মার্ট ট্যুরিজম’ উদ্দেশ্য হচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষ্টি, কালচার, পরিবেশ ও প্রকৃতি দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে তোলে ধরার পাশাপাশি, এই শিল্পটাকে গতিশীল করা। এবং সকল পর্যটকদের আন্তরিক সেবা প্রদান করে তাদের অন্তরে স্থান দখল করে নেয়া।
‘স্মার্ট ট্যুরিজম’ এর সেবা প্রদানকারী প্রতিটি সদস্য গ্রাহকদের সাথে আন্তরিক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আচরনের জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমাদের রয়েছে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একদল তরুন ওয়ার্কিং টিম, তারা গ্রাহকদের প্রতিটি কাজ এবং ভ্রমন সংক্রান্ত সকল সেবা সময় মত প্রদান করতে প্রস্তুত।
‘স্মার্ট ট্যুরিজম’ মূলত ট্যুর অপারেটর ও ট্রাভেল এজেন্সি এবং ভ্রমন সেবা প্রদানকারী একটি প্রতিষ্ঠান। আমরা জানি পর্যটন একটি সেবা খাত। তাই সতর্কতা অবলম্বন করে প্রাইভেট ও গ্রুপ ট্যুরে আসা সম্মানীত অথিতিদের দর্শনীয় স্থান বিনোদনের মাধ্যমে ভ্রমনের ব্যবস্থা প্রদান করে থাকে।

শ্রীমঙ্গলে অবস্থান করে আপনি এ অঞ্চলের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করতে পারেন। যেমন. . .

চা বাগান: ৪৫০ কিলোমিটার আয়তনের শ্রীমঙ্গলকে বাংলাদেশের ‘চায়ের রাজধানী’ বলা হয়ে থাকে। এখানকার চা বাগানের নজরকাড়া সৌন্দর্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করে চলেছে। এখানকার মাইলের পর মাইল বিস্তৃত চা বাগান দেখে মনে হবে যেন পাহাড়ের ঢালে সবুজ গালিচা বিছানো রয়েছে। চা বাগানের সবুজ বুক চিরে আঁকাবাঁকা পথ ধরে কোন এক বিকেলে বৈকালিক ভ্রমন করলে মনটা আনন্দের অতিশয্যে ভরে উঠবেই-উঠবে। শ্রীমঙ্গল উপজেলায় জেমস ফিনলে, ইস্পাহানি টি কোম্পানী ও ব্যাক্তিমালিকানাধীন মিলিয়ে ছোট-বড় ৪৪টি চা বাগান রয়েছে। দেশের সবচেয়ে উন্নতমানের চা এখানেই উৎপন্ন হয়ে থাকে। চা বাগান মানেই অপার্থিব মুগ্ধতা ছড়ানো এ অস্থিত।

বাইক্কা বিল: শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় বিশ কিলোমিটার দূরে উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত হাইল হাওড়ের বাইক্কা বিল । এটি প্রায় ১০০ হেক্টর আয়তনের হাইল হাওড়ের জলাভূমির পূর্বদিকে অবস্থিত। বাইক্কা বিলটিকে ২০০৩ সালে বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয় মৎস্য সম্পদের একটি অভয়াশ্রম হিসেবে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়। এখানে অনেক দেশিয় প্রজাতির মাছ বংশবৃদ্ধি করে পুরো হাওড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এই বিল শুধু মাছের জন্যেই নয়, পাখি এবং অন্যান্য অনেক প্রাণীর জন্যও একটি চমৎকার নিরাপদ আবাসস্থল। বাইক্কা বিলের নয়নাভিরাম জলাভূমিতে বর্ষায় হাজারো শাপলা আর পদ্ম ফুল ফোটে। এছাড়া এই বিলের বুনো বাসিন্দা আর শীতে আগত হাজার হাজার পরিযায়ী পাখিদের ভালোভাবে দেখার জন্য তৈরি করা হয়েছে একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার।

বন্যপ্রানী সেবা ফাউন্ডেশন: শ্রীমঙ্গলে আগত দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে মুগ্ধতার আবেশ ছড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ বন্যপ্রানী সেবা ফাউন্ডেশন। সিতেশ দেবের চিড়িয়াখানা-এক নামে সারাদেশে পরিচিত। এক সময়ের দুর্ধর্ষ শিকারী সিতেশ রঞ্জন দেব সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন একটি মিনি চিড়িয়াখানা। শ্রীমঙ্গলে তাঁর মিশন রোডস্থ বাসভবনে ১৯৭২ সালে শুরু করা চিড়িয়াখানাটি বর্তমানে স্থানান্তর করে শহরতলীর ভাড়াউড়া এলাকায় নিজ খামার বাড়িতে নিয়ে গেছেন তিনি। তার মিনি চিড়িয়াখানায় রয়েছে দূর্লভ ও বিলুপ্তপ্রায় কিছু প্রাণী। বর্তমানে ভাল্লুক, পাহাড়ি ময়না, গন্ধগকোল, হরিয়াল, লক্ষণ টিয়া, ধনেশ, গুইসাপ, উরুক্কু কাঠবিড়ালি, বিরল প্রজাতির সাদা আলবিনো বাঘ, মেছো বাঘ, গোল্ডেন টারটইল বা সোনালী কচ্ছপ, সোনালী বাঘ, লজ্জাবতী বানর, সাইবেরিয়ান লেজ্জা লামবার্ড, ঘুঘু, বানর, বন্যমথুরা, বন্যমোরগ, সরালী, কালেম, ময়না, বন্যমাছ, অজগর সাপ, মেলর্ড, তিতির, মায়া হরিণ, সজারু, ইন্ডিয়ান সোনালী বানর, বন্যখরগোস, সাদা খরগোস প্রভৃতি প্রাণী রয়েছে তাঁর চিড়িয়াখানায়।

সাত লেয়ারের ‘নীল কন্ঠ’ চা কেবিন: সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলা হলো প্রাকৃতিক অপরুপ সৌন্দর্যের এক লীলাভৃমি। প্রতি নিয়ত এখানে দেশি বিদেশি পর্যটক আসেন প্রকৃতির রুপ দেখার জন্য।  প্রকৃতির সাজ দেখার পাশাপাশি অনেকেই আসেন চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলের সাত রঙের চায়ের স্বাদ নিতেও। এখানে যারা বেড়াতে আসেন সাত রঙের চা বা সাত লেয়ারের চায়ের স্বাদ নিতে কেউই ভুলেন না। এ চা জিভে জলের বদলে বিস্ময় জাগায় বেশি। আর এই চায়ের আবিস্কারক হলেন রমেশ রাম গৌড়। প্রায় এক যুগ ধরেই তিনি ওই চা বানাচ্ছেন। তার দুইটি দোকান রয়েছে। একটি মণিপুরী অধ্যুষিত রামনগর অন্যটি কালিঘাট রোডে বিজিবি’র সীমান্ত স্পন্দন ক্যান্টিনে যার নাম ‘নীলকণ্ঠ’ চা কেবিন। রমেশের আবিস্কৃত এ চায়ের মতো অবিকল চা এখন পাওয়া যায় অনেক স্থানেও। তবে তার চায়ের মতো স্বাদ নেই।

টি মিউজিয়াম: বাংলাদেশের চা শিল্পের ইতিহাস প্রায় দেড় শতাধিক বছরের প্রাচীন। ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনিছড়ায় চা বাগান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সর্বপ্রথম বানিজ্যিকভাবে চা শিল্প যাত্রা শুরু করে। এর পর প্রর্যাক্রমে শ্রীমঙ্গলসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। চা-বাগান প্রতিষ্ঠার সময় ব্রিটিশরা ভারতের বিভিন্ন
অঞ্চল থেকে শ্রমিকদের এনেছিল। ব্রিটিশরা প্রথম যে শ্রমিকদের এখানে এনেছিল, তারা এখন আর বেঁচে নেই। রয়েছে তাদের বংশধররা। দেশের পুরোনো প্রাকৃতিক পরিবেশসমৃদ্ধ চা শিল্পের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধরে রাখার লক্ষ্যে টি মিউজিয়াম বা চা জাদুঘর স্থাপন করেছে চা বোর্ড। ব্রিটিশ আমলে চা-বাগানগুলোতে
ব্যবহূত বিভিন্ন সামগ্রী সংরক্ষণ ও নতুন প্রজন্মের সঙ্গে এ শিল্পের ঐতিহ্যের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সড়কের পাশে চা বাগান ঘেরা মনোমুগ্ধকর এক নির্জন পরিবেশে স্থাপন করা হয়েছে টি মিউজিয়াম।

লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্ক: জীববৈচিত্র্যে ভরপুর ও প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য এবং রুপমমতায় অনন্য লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্ক মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত। এটি দেশের ট্রপিক্যাল রেইন ফরেস্ট হিসেবে খ্যাত। এটি উন্মুক্ত উল্লুক দেখার জন্য শ্রেষ্ঠ উদ্যান। নয়নভুলানো এ পার্কটিতে সারাবছরই পর্যটকের পদভারে থাকে মুখরিত। এটিকে ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্ক হিসেবে ঘোষনা করা হয়। যার আয়তন ১ হাজার ২৫০ হেক্টর।

রাবার বাগান: শ্রীমঙ্গলে রয়েছে বন শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের সিলেট বিভাগী অফিস । এ আফিসের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে সরকারী ৪টি রাবার বাগান। এ ছাড়াও প্রায় প্রত্যেক বেসরকারী বাগানেও এখন রাবার চাষ করা হচ্ছে। আপনি ইচ্ছে করলে যে কোন একটি রাবার বাগান ঘুরে দেখতে পারেন এবং জানতে পারেন কিভাবে রাবার তৈরী হয়, জানতে পারেন রাবার শমিকের জীবন। আপনি যখন হাজার হাজার রাবার গাছের মধ্য দিয়ে হাঁটবেন তখন আপনি দেখবেন গাছের ডালপালা পুরু আকাশটাকে  ঢেকে রেখেছে।

লেবু বাগান: খুব ভোর উঠে শ্রীমঙ্গল বাজারে যদি যান, তাহলে দেখবেন শুধু লেবু আর লেবু । নিজের চোখকেই অবিশ্বাস্য মনে হবে এতো লেবু শ্রীমঙ্গলে  জম্মে ! শ্রীমঙ্গলের চা বাগানের ফাঁকে ফাঁকে রয়েছে শত শত লেবু বাগান । খুব ভোর থেকেই জীপ ও ঠেলা ভর্তি করে লেবু ব্যবসায়ীরা বাগান থেকে লেবু এনে বাজারে জমা করে । শহর থেকে চা বাগান ধরে যেকোন দিকে  এগুলেই দেখতে পাবেন ছোট ছোট লেবু বাগান, বাগানের কাছে গেলেই আচমকা লেবুর ঘ্রাণ লাগবে আপনার নাকে । এখানে সাধারনত ৮/১০ প্রকারের লেবু হয়ে থাকে। যাবার সময় কিছু লেবু কিনে নিয়ে যেতে পারেন। কারন দেশের যে কোন জায়গা থেকে শ্রীমঙ্গলে লেবু সস্তা।

খাসিয়া পুঞ্জি: খাসিয়া বাংলাদেশে বসবাসরত একটি মাতৃতান্ত্রিক নৃগোষ্ঠি। এরা মঙ্গোলীয় বংশোদ্ভূত। খাসিয়ারা প্রায় পাঁচ শতাধিক বছর আগে আসাম থেকে বাংলাদেশে আসে। পাহাড়-টিলা, ঝোপজঙ্গল এদের পছন্দনীয় পরিবেশ। কাঠ বা বাঁশের মঞ্চের উপর বারান্দাসহ এরা কুঁড়েঘর বানায়। বারান্দাই বৈঠক ঘর হিসেবে ব্যবহূত হয়। খাসিয়ারা গ্রামকে পুঞ্জি বলে। তাদের প্রতিটি পুঞ্জিতে একজন করে মন্ত্রী (খাসিয়া প্রধান) থাকেন। অন্যান্য সম্প্রদায় থেকে আলাদা সাংস্কৃতিক বলয়ে গ্রামগুলি পুঞ্জীভূত। জীবিকার তাগিদে দলেবলে স্থান ত্যাগ করে এরা নতুন পুঞ্জি রচনা করে। এমনই এক পুঞ্জির নাম লাউয়াছড়া খাসিয়া পুঞ্জি। এটি লাউয়াছড়া পার্কে অবস্থিত। তাদের বিচিত্র জীবনধারা,কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য আপনিও ছুঠে যেতে পারেন তাদের পুঞ্জিতে।

মাধবপুর লেক: চারিদিকে সুউচ্চ পাহাড়ের মাঝখানে অবস্থিত মাধবপুর লেকটি সত্যি অপূর্ব। লেকের ঝলমল পানি, ছায়া সুনিবিড় পরিবেশ, শাপলা শালুকের উপস্থিতি আরও মনোমুগ্ধকর করে তুলে। আস্তে আস্তে যতই সামনের দিকে এগুতে থাকবেন ততই ভাল লাগবে। মাধবপুর লেকে গিয়ে পৌঁছতেই সবুজ পাতার গন্ধ যে কারো মনকে চাঙ্গা করে তুলবে। চারদিকে সবুজ পাহাড়। পাশাপাশি উঁচু উঁচু টিলা। সমতল চা বাগানে গাছের সারি। এ লেকটি যেন প্রকৃতির নিজ হাতে অঙ্কিত মায়াবী নৈসর্গিক দৃশ্য। সুনীল আকাশ আর গাঢ় সবুজ পাহাড়, শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবির মত চা বাগানের এই মনোরম দৃশ্য পর্যটকদের নিয়ে যায় ভিন্ন এক জগতে। কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নে পাত্রখলা চা বাগানে এটির অবস্থান।

হামহাম জলপ্রপ্রাত: মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বন বিট এলাকায় অবস্থিত প্রাকৃতিক জলপ্রপাত ‘হামহাম’। এটি আস্তে আস্তে পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয় হয়ে উঠছে। এই জলপ্রপাতটি ২০১০ খ্রিস্টাব্দের শেষাংশে দুর্গম জঙ্গলে ঘোরা একদল পর্যটক আবিষ্কার করেন। দুর্গম গভীর জঙ্গলে এই জলপ্রপাতটির উচ্চতা সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন পর্যটকরা। কারো কারো মতে এর উচ্চতা ১৩৫, ১৪৭, ১৬০ ফুট উঁচু বলে তাদের ধারনা । আসলে ‘হামহাম’ জলপ্রপাতের উচ্চতা বিষয়ে কোনো প্রতিষ্ঠিত কিংবা পরীক্ষিত মত এখনও পাওয়া যায়নি। এই সবই পর্যটকদের অনুমান। তবে গবেষকরা মত প্রকাশ করেন যে, এর ব্যপ্তি, মাধবকুন্ডের ব্যাপ্তির প্রায় তিনগুণ বড়।

মাধবকুন্ড জলপ্রপ্রাত: পর্যটকদের কাছে অত্যান্ত আকর্ষনীয় মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ জলপ্রপাত হিসেবে সমধিক পরিচিত। এটি মৌলভীবাজারের বড়লেখায় অবস্থিত। পাথারিয়া পাহাড় কঠিন পাথরে গঠিত। এই পাহাড়ের উপর দিয়ে গঙ্গামারা ছড়া বহমান। এই ছড়া মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত হয়ে নিচে পড়ে হয়েছে মাধবছড়া। প্রায় ১৬২ ফুট উঁচু থেকে পাহাড়ের উপর থেকে জলরাশি এর গা বেয়ে অবিরাম ধারায় সাঁ সাঁ শব্দে নিচে পড়ছে। অবিরাম পতনের ফলে নিচে সৃষ্টি হয়েছে কুণ্ডের। আর কুণ্ডের প্রবাহমান স্রোতধারা শান্তির বারিধারার মতো মাধবছড়া দিয়ে প্রবাহিত হয়। এখানে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন পর্যটকদের সুবিধার্থে একটি রেস্টুরেন্ট, রেস্টহাউস ও বসার জন্য কিছু শেড নির্মাণ করে। শীতকালে এখানে শত শত পর্যটকের আগমন ঘটে।

হযরত শহ জালাল (রহঃ) মাজার: উপমহাদেশের বিখ্যাত সুফি দরবেশ হযরত শাহজালাল (রহঃ) মাজার সারা বছরই দর্শনার্থীদের ভিড় থাকে। এটি সিলেট সদরে অবস্থিত। হযরত শাহজালাল (রহঃ) ৩৬০ জন সফরসঙ্গী আউলিয়া নিয়ে ইয়ামেন থেকে ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে ৩২ বৎসর বয়সে সিলেটে আগমন করেন। তিনি ১৩৪১ খ্রিস্টাব্দে এই সিলেটেই ইন্তেকাল করেন। ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল হযরত শাহজালাল (রহঃ) ইন্তেকালের পর তাঁকে সিলেটের মাটিতেই সমাহিত করা হয়। এর আগে সিলেট বিজয়ের পর শাহ জালালের সঙ্গী-অনুসারীদের মধ্য হতে অনেক পীর-দরবেশ এবং তাদের পরে তাঁদের বংশধরগণ সিলেট সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বসবাস শুরু করেন।

হযরত শহ পরান (রহঃ) মাজার: সিলেটের হযরত শাহ জালাল (রহঃ) মাজার থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে সূফি দরবেশ হযরত শাহপরান (রহঃ) মাজার সারাক্ষনই ভক্তদের উপস্থিতিতে থাকে সরব। শাহ পরাণের মাজারও সিলেট শহরের একটি পুণ্য তীর্থ বা আধ্যাতিক স্থাপনা। তিনি ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে মধ্যপ্রাচ্য হতে বাংলাদেশে আসেন ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে শাহ জালালের অন্যতম সফরসঙ্গী হয়ে। শাহ পরাণের ইন্তেকালের পর তাঁকে সমাধি করা হয় সিলেট শহরের পূর্ব দিকে খাদিম নগর এলাকায়। দরগাহের মত এ মাজারেও প্রচুর দর্শনার্থীর আগমন ঘটে।

জাফলং: ভ্রমন পিপাসুদের কাছে অত্যান্ত আকর্ষনীয় জাফলং শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার দূরে। ডাউকি পাহাড় থেকে অবিরাম ধারায় প্রবাহমান জলপ্রপাত, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, পিয়াইন নদীর সচ্ছ হিমেল পানি আর স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তুপ, সীমান্তের ওপারে ইন্ডিয়ার উঁচু পাহারের সবুজাব চুড়ায় তুলার মত মেঘরাজির বিচরণ ক্ষেত্র সিলেটের জাফলংয় পর্যটকদের আগমনে মূখর থাকে সারা বছর। তাই আপনি ইচ্ছে করলে শ্রীমঙ্গলে অবস্থান করেই জাফলং ভ্রমন করতে পারেন।

লালাখাল: সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত প্রাকৃতিক সুন্দর্যের এক অপরুপ লীলাভূমি ও স্বচ্ছ নীল পানির নদী লালাখাল পর্যটকদের কাছে অত্যান্ত আকর্ষনীয়। প্রকৃতিকে একান্তে অনুভব করার জন্য স্থানটি বেশ উপযোগী। পাহাড়ে ঘন সবুজ বন, নদী, চা-বাগান ও নানা জাতের বৃক্ষের সমাহার লালাখালজুড়ে। পানি আর প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়া এখানকার মানুষের জীবনযাত্রাও আপনাকে দেবে নতুন করে বাঁচার প্রেরণা। লালাখালে গেলে আদিবাসীদের সঙ্গে আপনার সখ্যের সুযোগও থাকছে! সবকিছু মিলিয়ে এলাকাটি পর্যটকদের কাছে বেশ প্রিয়, কাঙ্ক্ষিত ও প্রতীক্ষিত একটি স্থান।

বিছনাকান্দি: শ্রীমঙ্গলে অবস্থান করে আপনি দেখতে পারেন প্রকৃতির আপন লীলাখেলায় মেতে থাকা অপার সৌন্দর্যের জলপাথড়ের ভূমি বিছনাকান্দি। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে ১৩৭ কিলোমিটার পথ দূরে বিছনাকান্দির অবস্থান। বিছনাকান্দি সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত। বিছনাকান্দির এখানে-ওখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে পাথর আর পাথর। যা দেখে মনে হবে যেন একটি পাথরের বিছানা। বিছনাকান্দির অপূর্ব সৌন্দর্য দেখে নিমিষেই আপনার ক্লান্তিশ দূর হয়ে যাবে।

রাতারগুল: বাংলাদেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন বা সোয়াম্প ফরেস্ট এবং বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রাতারগুল জলাবন পর্যটকদের কাছে অত্যান্ত আকর্ষনীয় । যে জলাবনের মোট আয়তন ৩,৩২৫.৬১ একর। এর মধ্যে ৫০৪ একর বনকে ১৯৭৩ সালে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এটি পৃথিবীর মাত্র কয়েকটি জলাবনের মধ্যে অন্যতম একটি। চাইলে শ্রীমঙ্গলে অবস্থান করেই আপনি এ জলাবনটি ভ্রমন করতে পারব

About Us | Photo Gallery | Video Gallery | Contact

Copyright © 2018 Smart Tourism, All Rights Reserved. Developed By: Virtual Design